কে? কে ওখানে?
কোন সাড়া শব্দ পাওয়া যাচ্ছেনা। সোমার মত দেখা যাচ্ছে, কিন্তু সোমা এখানে আসবে কেন? এত রাতে সোমা আমার কাছে কি চায়?
.
২০১৪ সালের ২রা ডিসেম্বর সোমা আমাকে ভুলে যেতে বলেছিল। ভুলে যাওয়াটা কি এতই সোজা? পৃথিবীর সবাই যদি চিৎকার করেও বলে আমি আমার ভালবাসার মানুষকে ভুলে গেছি তবুও আমি বিশ্বাস করবনা। আর আমি বাকি জীবনে তপস্যা করেও সোমাকে ভুলে যাওয়া আমার পক্ষে সম্ভবনা।
সেদিন আমাকে ভুলতে বলে সোমা কেন কেঁদেছিল? সে আমাকে যদি ভালই না বাসত তাহলেতো আর কাঁদতনা। প্রিয়জনকে ছেড়ে যাবার সময় কলিজা ছিড়ে যায় এমন মনে হয়।
.
আমাদের ভালবাসা যখন আড়াই বছর পেরিয়ে গেল তখন থেকে আমার জীবনে নেমে এল অন্ধকার।
যে সোমা প্রতিটাদিন সকালে আমাকে ফোন করে জিজ্ঞেস করত আমি নাস্তা করেছি কিনা, যদি বলতাম হ্যাঁ করেছি তখন সে নাস্তা করত। সোমাকে খাওয়ানোর জন্য অনেক সময় মিথ্যে বলতাম, হ্যাঁ খেয়েছিগো। জানতাম, যদি বলি খাইনি তাহলে সেও না খেয়ে থাকবে।
সেই সোমাকে আমি ঘন্টার পর ঘন্টা মোবাইলে ওয়েটিং পেয়েছি। আমি নাস্তা করেছি কিনা প্রশ্নও করতনা। পরে যখন ফোন রিসিভ করত, তখন কড়া মেজাজে কথা বলত।
আমি অবাক হয়ে ভাবতাম, এটাতো আমার সোমা না। ওর এমন পরিবর্তনের পিছনে নিশ্চয় কারন আছে।
সোমা রাগ হয়ে প্রশ্ন করত,
--- তুমি কি আমাকে সন্দেহ করো?
--- সোমা, এটা যে কেউ সন্দেহ করবে। তোমার হঠাৎ এমন পরিবর্তন কেন? কার সাথে ফোনে এত কথা বলো?
--- আমি ফোনে কথা বলতেই পারি।
--- সোমা, তুমি আগে প্রতি সপ্তাহে আমার সাথে একবার দেখা করতে, অথচ গত দুই মাসে তুমি একবারও দেখা করোনি, কেন?
--- বাড়ি থেকে এখন আমাকে বের হতে দেয়না।
--- তবে এভাবে কতদিন?
--- জানিনা।
.
আমারও হঠাৎ অনেক পরিবর্তন হয়ে গেল। সোমার কথা ভাবতে ভাবতে পাগলের মত হয়ে যাচ্ছিলাম। সময় মত খাওয়া দাওয়া করতামনা। রাতের পর রাত গান শুনতাম আর সোমাকে ফোন দেয়ার চেষ্টা করতাম। যাকে ভালবাসি তার সাথে একটু কথা বলার সময় যদি ফোন ওয়েটিং দেখি, এটা যে কত বড় যন্ত্রনাকর তা শুধু যারা এমন অবস্থায় পড়েছে তারা বুঝতে পারে। শেষে হঠাৎ ফোনটা রিসিভ করে বলত আমার খুব ঘুম পাচ্ছে, শুভ রাত্রি।
এভাবে কতদিন মেনে নেয়া যায়?
.
অনেক জোর করার পর সোমা দেখা করতে রাজী হল। আমিও যথাস্থানে উপস্থিত। সোমা এসে আমার পাশে বসে আছে।
আগে যদি সোমার সাথে দেখা করতে আসতাম, সে আমার শার্টের বুকের পাশের বোতাম লাগিয়ে দিয়ে বলত, রাস্তা ঘাটে কাকে দেখাতে বোতাম খুলে রাখো? দেখোতো ছেলেটার চুলের কি অবস্থা, এই তোমার বাড়িতে কি তেল, শ্যাম্পু কিছু নাই নাকি?
কোথায় গেল সেই দিন? আজ আমার দাড়ি গোফে আমাকে চেনা যায়না, চুলগুলোও আচড়াইনি। বাড়ি থেকে আসার সময় সেন্ডেল পড়ে এসেছি, তাও আবার দুই জোড়ার দুই জুতো। সেটাও সোমা আজ খেয়াল করেনি। অনেক চুপ থেকে সোমা বলতেছে,,,
--- আসলে শ্রাবণ তোমাকে একটা কথা বলার ছিল।
--- একটা কেন বলবে? কতদিন পর তোমাকে দেখলাম, আজতো আমরা সারাদিন ঘুরব।
--- না শ্রাবণ, আমি কিছুক্ষনের মধ্যে বাড়ি ফিরব। অনেক কষ্টে বাসা থেকে বের হয়েছি। কথাটা বলেই চলে যাব। আর আমাদের কখনো এভাবে দেখা হবেনা।
--- সোমা তুমি এসব কি বলতেছো? আমিতো কিছুই বুঝতে পারছিনা।
--- আমি বুঝিয়ে বলতেছি, তুমি একটু শান্ত হয়ে শুনো।
--- আচ্ছা, বলো....
--- আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে, সামনের মাসে আমার...
--- এই, থামো থামো। মাথা ঠিক আছে তোমার। এভাবে কেউ মজা করে?
--- শ্রাবন আমি মজা করছিনা, তুমি চুপ করে শুনো।
--- আমি কি শুনব? কি বলতেছো এসব।
--- আমি ঠিকই বলতেছি, সামনের মাসে আমার বিয়ে, তুমি আমাকে ভুলে যাও।
--- সোমা তুমি এভাবে বলোনা। তুমি যেভাবে বলো আমি সেভাবেই চলব। তোমাকে কখনো সন্দেহ করবনা, ফোন ওয়েটিং দেখলেও কিছু বলবনা। তবুও এভাবে ছেড়ে যাওয়ার কোন মানে হয়না।
--- তুমি কাঁদতেছো কেন বোকার মত? আমার চেয়ে ভাল মেয়েকে তুমি বিয়ে করতে পারবে। দেখো শ্রাবণ জীবন কারো জন্য থেমে থাকেনা। একজন গেলে জীবনে আরেকজন আসবে, এটাই প্রকৃতির নিয়ম।
--- সোমা, এই সোমা। আমি দুদিন রাগ করে তোমাকে ফোন দেইনি বলে তুমিনা আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলে? তুমি কতদিন আমার জন্য না খেয়ে কাটিয়ে দিছো? আমার একটা ফোনের জন্য কত ব্যাকুল হয়ে থাকতে।
সোমা তুমি এসব মিথ্যে বলছ।
--- শ্রাবণ সেগুলো আবেগ ছিল, বাস্তব বড় কঠিন। আমার বাবা নেই, মা এত সুন্দর পাত্র হাতছাড়া করবেনা। আর আমিও মাকে কষ্ট দিতে পারবনা। দুদিন হয়তো খারাপ লাগবে, পরে সব ঠিক হয়ে যাবে। যাও বাড়ি ফিরে যাও, আমাকেও এখন যেতে হবে।
আরে এভাবে বোকার মত কাঁদতেছো কেন?
--- তুমি কাঁদতেছো কেন? তোমার চোখে পানি কেন? সোমা কি হয়েছে আমাকে বলো।
--- আরে চোখে কি যেন পড়ছে, আমি গেলাম।
.
সত্যি সত্যি সোমার বিয়ে হয়ে গেছে তার মামাতো ভাইয়ের সাথে। বিয়ের চারদিন পর সোমার বান্ধবী আমাকে জানিয়েছে সোমার বিয়ে হয়ে গেছে। কেউ যদি হঠাৎ শুনে তার প্রেমিকার বিয়ে হয়ে গেছে, সেই মূহূর্তে তার অবস্থা কেমন হবে আমার জানা নেই। আমি একটুও কাঁদিনি। সোজা বাড়িতে চলে
কোন সাড়া শব্দ পাওয়া যাচ্ছেনা। সোমার মত দেখা যাচ্ছে, কিন্তু সোমা এখানে আসবে কেন? এত রাতে সোমা আমার কাছে কি চায়?
.
২০১৪ সালের ২রা ডিসেম্বর সোমা আমাকে ভুলে যেতে বলেছিল। ভুলে যাওয়াটা কি এতই সোজা? পৃথিবীর সবাই যদি চিৎকার করেও বলে আমি আমার ভালবাসার মানুষকে ভুলে গেছি তবুও আমি বিশ্বাস করবনা। আর আমি বাকি জীবনে তপস্যা করেও সোমাকে ভুলে যাওয়া আমার পক্ষে সম্ভবনা।
সেদিন আমাকে ভুলতে বলে সোমা কেন কেঁদেছিল? সে আমাকে যদি ভালই না বাসত তাহলেতো আর কাঁদতনা। প্রিয়জনকে ছেড়ে যাবার সময় কলিজা ছিড়ে যায় এমন মনে হয়।
.
আমাদের ভালবাসা যখন আড়াই বছর পেরিয়ে গেল তখন থেকে আমার জীবনে নেমে এল অন্ধকার।
যে সোমা প্রতিটাদিন সকালে আমাকে ফোন করে জিজ্ঞেস করত আমি নাস্তা করেছি কিনা, যদি বলতাম হ্যাঁ করেছি তখন সে নাস্তা করত। সোমাকে খাওয়ানোর জন্য অনেক সময় মিথ্যে বলতাম, হ্যাঁ খেয়েছিগো। জানতাম, যদি বলি খাইনি তাহলে সেও না খেয়ে থাকবে।
সেই সোমাকে আমি ঘন্টার পর ঘন্টা মোবাইলে ওয়েটিং পেয়েছি। আমি নাস্তা করেছি কিনা প্রশ্নও করতনা। পরে যখন ফোন রিসিভ করত, তখন কড়া মেজাজে কথা বলত।
আমি অবাক হয়ে ভাবতাম, এটাতো আমার সোমা না। ওর এমন পরিবর্তনের পিছনে নিশ্চয় কারন আছে।
সোমা রাগ হয়ে প্রশ্ন করত,
--- তুমি কি আমাকে সন্দেহ করো?
--- সোমা, এটা যে কেউ সন্দেহ করবে। তোমার হঠাৎ এমন পরিবর্তন কেন? কার সাথে ফোনে এত কথা বলো?
--- আমি ফোনে কথা বলতেই পারি।
--- সোমা, তুমি আগে প্রতি সপ্তাহে আমার সাথে একবার দেখা করতে, অথচ গত দুই মাসে তুমি একবারও দেখা করোনি, কেন?
--- বাড়ি থেকে এখন আমাকে বের হতে দেয়না।
--- তবে এভাবে কতদিন?
--- জানিনা।
.
আমারও হঠাৎ অনেক পরিবর্তন হয়ে গেল। সোমার কথা ভাবতে ভাবতে পাগলের মত হয়ে যাচ্ছিলাম। সময় মত খাওয়া দাওয়া করতামনা। রাতের পর রাত গান শুনতাম আর সোমাকে ফোন দেয়ার চেষ্টা করতাম। যাকে ভালবাসি তার সাথে একটু কথা বলার সময় যদি ফোন ওয়েটিং দেখি, এটা যে কত বড় যন্ত্রনাকর তা শুধু যারা এমন অবস্থায় পড়েছে তারা বুঝতে পারে। শেষে হঠাৎ ফোনটা রিসিভ করে বলত আমার খুব ঘুম পাচ্ছে, শুভ রাত্রি।
এভাবে কতদিন মেনে নেয়া যায়?
.
অনেক জোর করার পর সোমা দেখা করতে রাজী হল। আমিও যথাস্থানে উপস্থিত। সোমা এসে আমার পাশে বসে আছে।
আগে যদি সোমার সাথে দেখা করতে আসতাম, সে আমার শার্টের বুকের পাশের বোতাম লাগিয়ে দিয়ে বলত, রাস্তা ঘাটে কাকে দেখাতে বোতাম খুলে রাখো? দেখোতো ছেলেটার চুলের কি অবস্থা, এই তোমার বাড়িতে কি তেল, শ্যাম্পু কিছু নাই নাকি?
কোথায় গেল সেই দিন? আজ আমার দাড়ি গোফে আমাকে চেনা যায়না, চুলগুলোও আচড়াইনি। বাড়ি থেকে আসার সময় সেন্ডেল পড়ে এসেছি, তাও আবার দুই জোড়ার দুই জুতো। সেটাও সোমা আজ খেয়াল করেনি। অনেক চুপ থেকে সোমা বলতেছে,,,
--- আসলে শ্রাবণ তোমাকে একটা কথা বলার ছিল।
--- একটা কেন বলবে? কতদিন পর তোমাকে দেখলাম, আজতো আমরা সারাদিন ঘুরব।
--- না শ্রাবণ, আমি কিছুক্ষনের মধ্যে বাড়ি ফিরব। অনেক কষ্টে বাসা থেকে বের হয়েছি। কথাটা বলেই চলে যাব। আর আমাদের কখনো এভাবে দেখা হবেনা।
--- সোমা তুমি এসব কি বলতেছো? আমিতো কিছুই বুঝতে পারছিনা।
--- আমি বুঝিয়ে বলতেছি, তুমি একটু শান্ত হয়ে শুনো।
--- আচ্ছা, বলো....
--- আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে, সামনের মাসে আমার...
--- এই, থামো থামো। মাথা ঠিক আছে তোমার। এভাবে কেউ মজা করে?
--- শ্রাবন আমি মজা করছিনা, তুমি চুপ করে শুনো।
--- আমি কি শুনব? কি বলতেছো এসব।
--- আমি ঠিকই বলতেছি, সামনের মাসে আমার বিয়ে, তুমি আমাকে ভুলে যাও।
--- সোমা তুমি এভাবে বলোনা। তুমি যেভাবে বলো আমি সেভাবেই চলব। তোমাকে কখনো সন্দেহ করবনা, ফোন ওয়েটিং দেখলেও কিছু বলবনা। তবুও এভাবে ছেড়ে যাওয়ার কোন মানে হয়না।
--- তুমি কাঁদতেছো কেন বোকার মত? আমার চেয়ে ভাল মেয়েকে তুমি বিয়ে করতে পারবে। দেখো শ্রাবণ জীবন কারো জন্য থেমে থাকেনা। একজন গেলে জীবনে আরেকজন আসবে, এটাই প্রকৃতির নিয়ম।
--- সোমা, এই সোমা। আমি দুদিন রাগ করে তোমাকে ফোন দেইনি বলে তুমিনা আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলে? তুমি কতদিন আমার জন্য না খেয়ে কাটিয়ে দিছো? আমার একটা ফোনের জন্য কত ব্যাকুল হয়ে থাকতে।
সোমা তুমি এসব মিথ্যে বলছ।
--- শ্রাবণ সেগুলো আবেগ ছিল, বাস্তব বড় কঠিন। আমার বাবা নেই, মা এত সুন্দর পাত্র হাতছাড়া করবেনা। আর আমিও মাকে কষ্ট দিতে পারবনা। দুদিন হয়তো খারাপ লাগবে, পরে সব ঠিক হয়ে যাবে। যাও বাড়ি ফিরে যাও, আমাকেও এখন যেতে হবে।
আরে এভাবে বোকার মত কাঁদতেছো কেন?
--- তুমি কাঁদতেছো কেন? তোমার চোখে পানি কেন? সোমা কি হয়েছে আমাকে বলো।
--- আরে চোখে কি যেন পড়ছে, আমি গেলাম।
.
সত্যি সত্যি সোমার বিয়ে হয়ে গেছে তার মামাতো ভাইয়ের সাথে। বিয়ের চারদিন পর সোমার বান্ধবী আমাকে জানিয়েছে সোমার বিয়ে হয়ে গেছে। কেউ যদি হঠাৎ শুনে তার প্রেমিকার বিয়ে হয়ে গেছে, সেই মূহূর্তে তার অবস্থা কেমন হবে আমার জানা নেই। আমি একটুও কাঁদিনি। সোজা বাড়িতে চলে
1 Comments
nice
ReplyDelete